ক্ষুধামন্দা/ক্ষুধা কমে যাওয়া (Decreased Appetite)

ক্ষুধামন্দা/ক্ষুধা কমে যাওয়া (Decreased Appetite)


বর্ণনা

লক্ষণটি ক্ষুধা না লাগা, অ্যানোরেক্সিয়া ( Anorexia) ও অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা (Anorexia nervosa) হিসেবেও পরিচিত।
ক্ষুধামন্দা খাদ্য গ্রহণের সাথে সম্পর্কযুক্ত এক প্রকার সমস্যা।  কোনো ব্যক্তির এই সমস্যা থাকলে তার শরীরের ওজন কমে যায় এবং তার মনে ওজন নিয়ে অহেতুক শঙ্কা দেখা দেয়। শরীরের ওজন ও আকার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ ধরনের ব্যক্তিরা এমন কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে যেগুলি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়।

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অ্যানোরেক্সিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য তারা খাদ্য গ্রহণের পর বমি করতে পারে, অতিরিক্ত ব্যায়াম করতে পারে বা ল্যাক্সেটিভ ( laxatives), ডাইউরেটিক্স (diuretics) ও এনেমা (enemas) অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করতে পারে।
এই সমস্যা দেখা দিলে অনেক ব্যক্তি অত্যাধিক পরিমাণে মদ্যপানও করতে পারে। অ্যানোরেক্সিয়া মূলত মানসিক (আবেগসংক্রান্ত) কিছু সমস্যা সমাধানের অস্বাস্থ্যকর উপায়। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা শরীর পাতলা রাখাকে আত্মসম্মান বৃদ্ধির অন্যতম উপায় বলে মনে করে।

অ্যানোরেক্সিয়া দূর করা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হতে পারে। তবে চিকিৎসার মাধ্যমে এতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভুল ধারণা ভাঙা, তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা এবং এ সমস্যার কারণে সৃষ্ট অন্য কিছু জটিলতা কমানো যেতে পারে।
 



কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-
অ্যাপেন্ডিসাইটিস (Appendicitis)ব্রেইন ক্যান্সার (Brain cancer)
লিভার ক্যান্সার (Liver cancer)ফুসফুসের ক্যান্সার (Lung cancer)
ডায়াবেটিক কিটোএ্যাসিডোসিস (Diabetic ketoacidosis)গলার ইনফেকশন (Strep throat)
অস্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস (Eating disorder)হাইপোগ্লাইসেমিয়া (Hypoglycemia)
খাদ্যনালীর ক্যান্সার (Esophageal cancer)ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার (Ovarian cancer)
বদহজম (Indigestion)অন্ত্রের ক্যান্সার (Intestinal cancer)
বিনাইন কিডনি সিস্ট (Benign kidney cyst)সিস্টিক ফাইব্রোসিস (Cystic fibrosis)
ইসোফ্যাজিয়াল ভ্যারিসেস (Esophageal varices)কোলিডোকোলিথায়াসিস (Choledocholithiasis)
হারপেনজিনা (Herpangina)প্রাইমারী ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি (Primary immunodeficiency)
অ্যাবসেস অফ নোজ / নাকের ফোঁড়া (Abscess of nose)অ্যাকিউট ব্রঙ্কাইটিস (Acute bronchitis)
হিস্টোপ্লাসমোসিস (Histoplasmosis)মিউকোসাইটিস (Mucositis)
নন-ইনফেকশস গ্যাস্ট্রোয়েন্টেরাইটিস (Noninfectious gastroenteritis)হাইপারকেলেমিয়া (Hyperkalemia)
মেটাট্যাস্টিক ক্যান্সার (Metastatic cancer)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যে সকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

  • লিঙ্গ: অল্পবয়স্ক মেয়ে এবং মহিলাদের অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা বেশি হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যায় আক্রান্ত অল্প বয়স্ক ছেলে এবং পুরুষদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • কম বয়স: সাধারণত টিনেজাররা অ্যানোরেক্সিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়। যে কোনো বয়সে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ৪০ বছরের বেশি বয়স্কদের এত খুব কম আক্রান্ত হয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে টিনেজা্দের এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া টিনএজারদের শরীরের ওজন ও আকার নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হলে তারা বেশি প্রভাবিত হয়। এই বিষয়টিও অ্যানোরেক্সিয়া সৃষ্টির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
  • জেনেটিক্স: কিছু জিনের পরিবর্তন অ্যানোরেক্সিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
  • পরিবার/বংশ: কোনো ব্যক্তির বাবা-মা, ভাই-বোন ও সন্তানদের অ্যানোরেক্সিয়া থাকলে তারও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • পরিবর্তন: নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাসস্থান, চাকরি, সম্পর্কের বিচ্ছেদ, প্রিয় কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর কারণে কোনো ব্যক্তি মানসিকভাবে প্রভাবিত হলে তার অ্যানোরেক্সিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
  • খেলাধূলা, শিল্পকর্ম ও অন্যান্য ক্রিয়াকলাপ: ক্রিড়াবিদ, অভিনেতা, নৃত্যশিল্পী ও মডেলদের অ্যানোরেক্সিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
  • মিডিয়া ও সমাজ: টিভি ও ফ্যাশন ম্যাগাজিনের মতো মিডিয়াগুলি হালকা-পাতলা গড়নের মডেল এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীদের উপস্থাপন করে। এই বিষয়টি ইঙ্গিত করে যে, শরীরের হালকা গড়নের সাথে সাফল্য ও জনপ্রিয়তা সম্পর্কযুক্ত। তবে এক্ষেত্রে মিডিয়া প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধ প্রকাশ করে, নাকি মূল্যবোধ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাতঃ শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপ্যানিক ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে।
  

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ হ্যাঁ, ক্ষুধামন্দা অ্যাকিউট হেপাটাইটিস এ, বি ও সি এর একটি সাধারণ লক্ষণ।

হেলথ টিপস্‌

ক্ষুধামন্দা দূর করা বেশ কঠিন। তবে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অনুসরণ করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
  • চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে চলা: থেরাপি সেশন বাদ দেবেন না। এছাড়া আপনার অস্বস্তিবোধ হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খাদ্যগ্রহণ অব্যাহত রাখুন।
  • ভিটামিন ও খনিজ উপাদান গ্রহণ সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: এ বিষয়টি সম্পর্কে পরামর্শ নেওয়া উচিৎ, কারণ ক্ষুধামন্দার জন্য শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়।
  • পরিবারের সদস্যদের সাহায্য নেওয়া: ক্ষুধামন্দা হলে পরিবারের সদস্যদের সাহায্য নিন। আপনাকে স্মরণে রাখতে হবে যে, অবশ্যই তারা আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
  • বারবার ওজন না মাপা ও আয়নার সামনে যাওয়া: এই অভ্যাসগুলি পরিহার করুন। এগুলির ফলে আপনার কোনো উপকার হবে না, বরং কিছু ক্ষতিকর অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে।
  • eHealth

Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

What is dementia ? Signs, Symptoms, Causes, Tests, Treatment, Care

ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (Intracerebral hemorrhage)