প্লুরাল ইফিউশন (Pleural effusion)

-

প্লুরাল ইফিউশন (Pleural effusion)

বর্ণনা

ফুসফুসের আবরণ সৃষ্টিকারী টিস্যুর দুই স্তরের মধ্যবর্তী স্থানকে প্লুরাল স্পেস (pleural space) বলে। এই স্থানে তরল জমা হওয়াকে প্লুরাল ইফিউশন বলা হয়। রোগটি পালমোনারি ইফিউশন (pulmonary effusion) হিসেবেও পরিচিত।
এই রোগ সৃষ্টিকারী তরলকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়- ১. ট্রান্সুডেট (Transudate) ও ২. এক্সুডেট (exudate)। ট্রান্সুডেট সাধারণত প্লাজমার আলট্রাফিলট্রেট (ultrafiltrate) দ্বারা সৃষ্টি হয়। ভাসকুলার হাইড্রোসট্যাটিক ফোর্স (vascular hydrostatic force) এবং অনকটিক ফোর্সের মধ্যে (oncotic force) ভারসাম্যহীনতার কারণে এমন হয়ে থাকে। অপরদিকে এক্সুডেট  সাধারণত ইনফ্লামেশনজনিত সমস্যার কারণে উৎপন্ন হয়, যেমন- ফুসফুসের ইনফেকশন বা ক্যান্সার। এক্সুডেট দ্বারা সৃষ্ট প্লুরাল ইফিউশন সাধারণত বেশি গুরুতর হয়ে থাকে এবং এর চিকিৎসা করাও কঠিন।

কারণ

বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে প্লিউরাল ইফিউশন হতে পারে, যেমন-
  • কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিওর
  • নিউমোনিয়া
  • লিভারের রোগ [সিরোসিস]
  • কিডনি রোগের শেষ পর্যায়
  • নেফ্রোটিক সিনড্রোম
  • ক্যানসার
  • পালমোনারি এমবলিজম
  • লুপাস ও অন্যান্য অটোইমিউন রোগ

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেনঃ
বুকের তীক্ষ্ণ ব্যথা (Sharp chest pain)শ্বাসকষ্ট (Shortness of breath)
কাশি (Cough)শ্বাস নিতে সমস্যা দেখা দেওয়া (Difficulty breathing)
পিঠের ব্যথা (Back pain)পাঁজরের হাড়ে ব্যথা (Rib pain)
জ্বর (Fever)পেটে তীক্ষ্ণ ব্যথা (Sharp abdominal pain)
গলা দিয়ে তরল নির্গত হওয়া (Drainage in Throat)দুর্বলতা (Weakness)
শরীরের পার্শ্বীয় ব্যথা (Side pain)শ্বাস নেবার সময় ব্যথা অনুভব করা (Hurts to breath)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত  বিষয়গুলি প্লুরাল ইফিউশন হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-
  • ঔষধ গ্রহণঃ নাইট্রোফুরান্টোইন (Nitrofurantoin), মেথিসারজাইড (Methysergide), ব্রমোক্রিপটিন (Bromocriptine), প্রোকারব্যাজাইন (Procarbazine),অ্যামিওডেরন (Amiodarone)
  • রেডিয়েশন থেরাপি
  • হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ও পেটের সার্জারি।
  • অঙ্গ প্রতিস্থাপন

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। নারীদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে।
জাতঃ শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপ্যানিক ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

  • (ক) প্লুরাল ইফিউশন কি কোনো গুরুতর রোগ ?
  • (খ) কার্যকরভাবে রোগটির চিকিৎসা করার পরও কি এটি পুনরায় হতে পারে ?
  • (গ) রোগটি কোনো পর্যায়ে গেলে সার্জারি করা প্রয়োজন হতে পারে ?
 
উত্তরঃ প্লুরাল ইফিউশন কতোটা গুরুতর তা এই রোগটির প্রাথমিক কারণগুলির উপর নির্ভরশীল। এছাড়া রোগটি কোনো ক্ষেত্রে নিরাময়যোগ্য কীনা এবং এর কারণে  নিঃশ্বাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কীনা, তার উপরও এটি কতোটা গুরুতর তা নির্ভর করছে। ভাইরাসজনিত ইনফেকশন, নিউমোনিয়া ও হার্ট ফেইলিওরের মতো কারণগুলির চিকিৎসা করা সম্ভব। সঠিক চিকিৎসার জন্য রোগটির সাথে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য সমস্যা ও এর অন্তর্নিহিত কারণগুলি নিরাময় করা প্রয়োজন।
উত্তরঃ হ্যাঁ, হতে পারে। যদি রোগটি যে কারণগুলির জন্য সৃষ্টি হয়েছে সেগুলি স্থায়ীভাবে থেকে যায়, বা যদি আক্রান্ত ব্যক্তি রোগটির ঝুঁকি বৃদ্ধিকারী কোনো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়, তাহলে তা পুনরায় হতে পারে। 
উত্তরঃ ড্রেইনেজ এবং প্লুরোডেসিস (pleurodesis) দ্বারা চিকিৎসা করা না গেলে ভিডিও অ্যাসিসটেড থোর‌্যাসিক সার্জারি (video-assisted thoracic surgery) অথবা ওপেন থোর‌্যাকোটমি (open thoracotomy) করা প্রয়োজন হতে পারে। এগুলি সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেশিয়া ব্যবহার করে সম্পন্ন করা হয় এবং সার্জারির পর চেস্ট টিউব কয়েক দিনের জন্য সেখানেই রেখে দেওয়া হয়। প্লুরাল স্পেস থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত বা আঁশযুক্ত টিস্যু অপসারণ করা দরকার হলে থোর‌্যাকটমির (Thoracotomy) প্রয়োজন হয়। 

হেলথ টিপস্‌

যেহেতু প্লুরাল ইফিউশন বিভিন্ন রোগের পরোক্ষ প্রভাবের কারণে হয়ে থাকে, তাই সেইসব রোগগুলি নির্ণয় ও চিকিৎসা করাই হলো প্লুরাল ইফিউশন প্রতিরোধ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। সময়মতো যক্ষা ও নিউমোনিয়ার মতো ইনফেকশনের চিকিৎসা করা হলে অনেক ক্ষেত্রে ইফিউশন রোধ করা সম্ভব। কোন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে এই রোগ হলে ঔষধটি সেবন করা বাদ দিতে হবে বা এর পরিবর্তে অন্য কোনো ঔষধ গ্রহণ করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে ভুল করে শিরার ইনজেকশন প্লিউরাল স্পেসে প্রবেশ করানো হলে ইফিউশন হতে পারে। এ জন্য সঠিক উপায়ে ইনজেকশন প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

-
Image
Explains anxiety and panic attacks, including possible causes and how you can access treatment and support. Includes tips for helping yourself, and guidance for friends and family. About anxiety What is anxiety? Anxiety is what we feel when we are worried, tense or afraid – particularly about things that are about to happen, or which we think could happen in the future. Anxiety is a natural human response when we perceive that we are under threat. It can be experienced through our thoughts, feelings and physical sensations. For me, anxiety feels as if everyone in the world is waiting for me to trip up, so that they can laugh at me. It makes me feel nervous and unsure whether the next step I take is the best way forward. Most people feel anxious at times. It's particularly common to experience some anxiety while coping with stressful events or changes, especially if they could have a big impact on your life.  What is the 'fight, flight or freeze' resp...
Read more

Fever

-
Fever Fever, also known as pyrexia and febrile response, is defined as having a temperature above the normal range due to an increase in the body's temperature set-point.There is not a single agreed-upon upper limit for normal temperature with sources using values between 37.5 and 38.3 °C (99.5 and 100.9 °F).The increase in set-point triggers increased muscle contractions and causes a feeling of cold.This results in greater heat production and efforts to conserve heat. When the set-point temperature returns to normal, a person feels hot, becomes flushed, and may begin to sweat. Rarely a fever may trigger a febrile seizure. This is more common in young children.Fevers do not typically go higher than 41 to 42 °C (105.8 to 107.6 °F). A fever can be caused by many medical conditions ranging from not serious to potentially serious. This includes viral, bacterial and parasitic infections such as the common cold, urinary tract infections, meningitis, malaria and appendicitis among...
Read more

Raynaud's disease

-
Raynaud's disease Raynaud's disease is a condition affecting the circulation of blood in the fingers and toes, usually when exposed to cold, sudden temperature changes or emotional stress. Symptoms include fingers and toes turning a distinctive white or blue colour and becoming numb.  When warmed they turn red and painful throbbing replaces the numbness.   The condition is caused by small blood vessels in the affected areas constricting and reducing blood flow.  Raynaud’s almost exclusively affects the fingers and toes but in rare cases the tip of the nose or earlobes can be affected.    It is a progressive condition, meaning it tends to worsen. Initially it may only affect the tips of the fingers or toes, but over time may affect whole fingers and toes. The rate of progression differs greatly amongst individuals. Types of Raynaud’s disease There are two types of Raynaud’s disease – Primary and Secondary:   Primary Ray...
Read more