হাইপারক্যালসেমিয়া (Hypercalcemia)

হাইপারক্যালসেমিয়া (Hypercalcemia)


বর্ণনা

হাইপারক্যালসেমিয়া হচ্ছে এমন একটি রোগ যার কারণে আপনার রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে হাড় দূর্বল হয়ে যায়, কিডনীতে পাথর হয় এবং হৃৎপিন্ড ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
প্যারাথাইরয়েড গ্ল্যান্ডের অতি মাত্রায় সক্রিয়তার কারণে হাইপারক্যালসেমিয়া দেখা দেয়। এই চারটি ক্ষুদ্র গ্ল্যান্ডের আকার চালের মত হয়ে থাকে এবং এই গুলো থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের উপরে অথবা আবস্থান করে। ক্যান্সার, নির্দিষ্ট কিছু মেডিকেল ডিজঅর্ডার, কিছু ঔষধ সেবন এবং ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে হাইপারক্যালসেমিয়া হয়ে থাকে।
এই রোগের উপসর্গ গুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এই রোগের চিকিৎসা এর অন্তর্নিহিত কারণের উপর নির্ভর করে।

কারণ

হাইপারক্যালসেমিয়া কারণ গুলো নিচে বর্ননা করা হল।
  • হাইপারথাইরয়েডিজম বা প্যারাথাইরয়েড গ্ল্যান্ডের অতি মাত্রায় সক্রিয়তা হলো এই রোগের প্রধান কারণ। চারটি প্যারাথাইরয়েড গ্ল্যান্ডের যে কোনো একটি অথবা একাধিক গ্ল্যান্ডের উপরে অবস্থিত একটি ছোট ননক্যান্সারাস (ক্ষতিকারক নয় এমন) টিউমারের কারণে হাইপারথাইরয়েডিজম হয়ে থাকে।  
  • ফুসফুস ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং রক্তের ক্যান্সারের কারণে হাইপারক্যালসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। হাড়ের ক্যান্সারের কারণেও এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • টিউবারকুলসিস এবং সারকোইডোসিসের কারণে রক্তে ভিটামিন ডি এর পরিমান বেড়ে যায়। যার ফলে আপনার পরিপাক নালীতে অতিমাত্রায় ক্যালসিয়াম জমে।  
  • ক্যান্সার বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অধিক সময় পর্যন্ত বসে বা শুয়ে থাকেন। যার কারণে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে হাইপারক্যালসেমিয়া দেখা দেয়।  
  • বাইপোলার ডিজঅর্ডার নিরাময়ের জন্য লিথিয়াম জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এই জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করার কারণে প্যারাথাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • অতিমাত্রায় ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহনের ফলে আপনার রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যাবে।
  • হাউপোক্যালসিরিক হাইপারক্যালসেমিয়া হচ্ছে একটি বিরল জেনেটিক ডিজঅর্ডার (বংশগত রোগ)। এই সমস্যার কারণে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • পানিশুন্যতার কারণেও হাইপারক্যালসেমিয়া হয়ে থাকে। যখন রক্তে তরলের মাত্রা কমে যায় তখন তখন রক্তে অতি মাত্রায় ক্যালসিয়াম জমা হতে থাকে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

এই রোগের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় গুলো নিম্নরূপ।
  • প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রামের চেয়ে বেশি পরিমানে ক্যালসিয়াম গ্রহন করলে হাইপারক্যালসেমিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।  
  • যে সকল মহিলাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি তাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।  
  • কিছু কিছু রোগের কারণে রোগী হাটাচলা করতে পারে না। যার ফলে শরীরের হাড় গুলো নিস্ক্রিয় হয়ে পরে এবং রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • পানিশুন্যতার কারণে রক্তে তরলের মাত্রা কমে গেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। 
জাতিঃ শেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম, হিসপানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ২ গুণ কম এবং অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।   

শেয়ার করুন


Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

What is dementia ? Signs, Symptoms, Causes, Tests, Treatment, Care

ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (Intracerebral hemorrhage)