এন্ডোকার্ডাইটিস (Endocarditis)

-

এন্ডোকার্ডাইটিস (Endocarditis)



বর্ণনা

এন্ডোকার্ডিয়াম হলো হৃদপ্রাচীরের অন্তঃস্থ স্তর যা হৃৎপিন্ডের প্রকোষ্ঠের অন্তঃপ্রাচীর গঠন করে হৃৎকপাটিকাকে ঢেকে রাখে এবং রক্তবাহিকার সাথে হৃৎপিণ্ডের অবিচ্ছিন্ন সংযোগ ঘটায়। এতে ইনফেকশন হলে তাকে এন্ডোকার্ডাইটিস বলে। এটি ইনফ্লামেশন অফ হার্ট ভাল্ভ নামেও পরিচিত।
মুখ বা দেহের অন্যান্য অঙ্গের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য জীবাণু রক্তে প্রবেশ করে এবং হার্টের দূর্বল অংশে আক্রমণ করে। ধীরে ধীরে এটি হার্টের কপাটিকাকে নষ্ট করে ফেলে যার কারণে ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। যাদের হার্টের বিভিন্ন সমস্যা আছে তাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। 

কারণ

জার্ম বা জীবাণু (ব্যাকটেরিয়া, ফাঞ্জাই বা অন্য কোন অণুজীব) রক্তে প্রবেশ করে হার্টের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু বা অস্বাভাবিক হার্ট ভাল্ভকে আক্রমণ করলে এন্ডোকার্ডাইটিস হয়। কখনো কখনো মুখ, গলা ও দেহের অন্যান্য অঙ্গের ব্যাকটেরিয়ার কারণেই এই রোগটি হয়ে থাকে। যেভাবে এটি রক্তেপ্রবেশ করেঃ
  • দাঁত ও মাড়িতে সমস্যা থাকলে দাঁত ব্রাশ ও খাবার চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করে।
  • বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন- স্কিন সোর বা ঘা, মাড়ির রোগ, যৌনরোগ, ইন্টেস্টাইনাল ডিজঅর্ডার, ইনফ্লামেটরী বাওয়েল ডিজিজের কারণে ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করে।
  • ক্যাথেটার বা নিডেলস (ট্যাটু বা পিয়ার্সিং এ ব্যবহৃত সুঁচ) এর মাধ্যমেও এটি হতে পারে।
  •  দাঁতের বিভিন্ন সমস্যার কারণেও এটি হতে পারে।
  •  হার্ট ভাল্ভের কোন সমস্যা বা রোগের কারণে এন্ডোকার্ডাইটিস হয়ে থাকে। 

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন: 
শ্বাসকষ্ট (Shortness of breath)মাথা ধরা (Dizziness)
বুকের তীক্ষ্ণ ব্যথা (Sharp chest pain)বুক ধড়ফড় করা (Palpitations)
অবসাদ (Fatigue)দুর্বলতা (Weakness)
হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া (Increased heart rate)অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (Irregular heart beat)
পা ফুলে যাওয়া (Leg swelling)শরীরের নিম্নাংশে ব্যথা (Lower body pain)
স্তনে ব্যথা বা ঘা হওয়া (Pain or soreness of breast)ঠাণ্ডায় কাঁপুনি (Chills)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

হার্ট সুস্থ থাকলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। যাদের মধ্যে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি তারা হলঃ
  • যাদের হার্ট ভাল্ভ আর্টিফিশিয়াল বা কৃত্রিম তাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • জন্মগতভাবেই হার্টের কোন সমস্যা থাকলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • পূর্বে এন্ডোকার্ডাইটিস এর সমস্যা থাকলে পরবর্তীতে পুনরায় হার্টের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন- রিউম্যাটিক ফিভার বা ইনফেকশনের কারণে হার্ট ভাল্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার কারণে এন্ডোকার্ডাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে কয়েকজন মিলে ড্রাগ গ্রহণ করলে এন্ডোকার্ডাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • হার্টের কোন সমস্যা থাকলেই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কতটুকু তা জেনে নেওয়া উচিৎ।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাতিঃ শ্বেতাঙ্গ ও হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতিদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

 
উত্তরঃ এই রোগের চিকিৎসা মূলত অ্যান্টিবায়োটিক দ্বারা করা হয়। কিন্তু এই রোগ মারাত্নক পর্যায়ে গেলে আক্রান্ত ভাল্ভ অপারেশনের মাধ্যমে ফেলে দেওয়া হয়। এন্ডোকার্ডাইটিস এর কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে, তার মধ্যে সাব-অ্যাকিউট ব্যাকটেরিয়াল এন্ডোকার্ডাইটিস মাসখানেক স্থায়ী হয়। কিন্তু এই রোগ থেকে সম্পূর্ণভাবে আরোগ্যলাভ করা সম্ভব। এই রোগের চিকিৎসা ব্যাকটেরিয়া, ড্রাগ ও ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। 

হেলথ টিপস্‌

এন্ডোকার্ডাইটিস প্রতিরোধ করতে নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করতে হবে। যেমন-
  •    পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
  •    দিনে দুইবার ব্রাশ করতে হবে,মাড়ি ও দাঁত ফ্লস করতে হবে এবং নিয়মিত ডেন্টিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে।
  •    বডি পিয়ার্সিং ও ট্যাটু করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  •    স্কিন ইনফেকশন, স্কিন চিড়ে গেলে বা ত্বকে ঘা হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
  •    বিভিন্ন ডেন্টাল ও মেডিকেল প্রসিডিউরস এর মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবেশ করে। তাই এসব প্রসিডিউরস এর আগে অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে।
যাদের হার্টের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- আর্টিফিশিয়াল হার্ট ভাল্ভ, এন্ডোকার্ডাইটিস ইনফেকশন, কঞ্জেনিটাল হার্ট ডিফেক্টস, হার্ট ভাল্ভের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছেতাদের ক্ষেত্রে মেডিকেল প্রসিডিউরস করানোর পূর্বে অবশ্যই প্রিভেন্টিভ অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে। 

Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

-
Image
Explains anxiety and panic attacks, including possible causes and how you can access treatment and support. Includes tips for helping yourself, and guidance for friends and family. About anxiety What is anxiety? Anxiety is what we feel when we are worried, tense or afraid – particularly about things that are about to happen, or which we think could happen in the future. Anxiety is a natural human response when we perceive that we are under threat. It can be experienced through our thoughts, feelings and physical sensations. For me, anxiety feels as if everyone in the world is waiting for me to trip up, so that they can laugh at me. It makes me feel nervous and unsure whether the next step I take is the best way forward. Most people feel anxious at times. It's particularly common to experience some anxiety while coping with stressful events or changes, especially if they could have a big impact on your life.  What is the 'fight, flight or freeze' resp...
Read more

Fever

-
Fever Fever, also known as pyrexia and febrile response, is defined as having a temperature above the normal range due to an increase in the body's temperature set-point.There is not a single agreed-upon upper limit for normal temperature with sources using values between 37.5 and 38.3 °C (99.5 and 100.9 °F).The increase in set-point triggers increased muscle contractions and causes a feeling of cold.This results in greater heat production and efforts to conserve heat. When the set-point temperature returns to normal, a person feels hot, becomes flushed, and may begin to sweat. Rarely a fever may trigger a febrile seizure. This is more common in young children.Fevers do not typically go higher than 41 to 42 °C (105.8 to 107.6 °F). A fever can be caused by many medical conditions ranging from not serious to potentially serious. This includes viral, bacterial and parasitic infections such as the common cold, urinary tract infections, meningitis, malaria and appendicitis among...
Read more

Raynaud's disease

-
Raynaud's disease Raynaud's disease is a condition affecting the circulation of blood in the fingers and toes, usually when exposed to cold, sudden temperature changes or emotional stress. Symptoms include fingers and toes turning a distinctive white or blue colour and becoming numb.  When warmed they turn red and painful throbbing replaces the numbness.   The condition is caused by small blood vessels in the affected areas constricting and reducing blood flow.  Raynaud’s almost exclusively affects the fingers and toes but in rare cases the tip of the nose or earlobes can be affected.    It is a progressive condition, meaning it tends to worsen. Initially it may only affect the tips of the fingers or toes, but over time may affect whole fingers and toes. The rate of progression differs greatly amongst individuals. Types of Raynaud’s disease There are two types of Raynaud’s disease – Primary and Secondary:   Primary Ray...
Read more