মায়েস্থেনিয়া গ্রেভিস (Myasthenia gravis)

মায়েস্থেনিয়া গ্রেভিস (Myasthenia gravis)


বর্ণনা

ঐচ্ছিক পেশীর দুর্বলতা এবং এর ঘন ঘন ক্লান্তি কে মায়েস্থেনিয়া গ্র্যাভিস বলে।
স্নায়ু (নার্ভ) এবং মাংস পেশীর মধ্যবর্তী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে এ রোগ হয়ে থাকে।
এ রোগ থেকে একবারে সেরে উঠা যায় না তবে চিকিৎসার মাধ্যমে লক্ষণ এবং উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো হল- হাত এবং পায়ের মাংস পেশী দূর্বল হয়ে যাওয়া, ডাবল ভিশন, চোখের পাতা ঝুলে পড়া, কথা বলতে সমস্যা হওয়া, খাবার চিবানো ও গলধঃকরণে অসুবিধা দেখা দেয়া এবং শ্বাস কষ্ট হওয়া।
যে কোন বয়সের মানুষের এই রোগ হতে পারে, তবে ৪০ এর নিচের বয়সী নারী এবং ষাটোর্ধ্ব পুরুষ এতে বেশি আক্রান্ত হন।

কারণ

নার্ভ ইম্পালস মাংস পেশীতে পৌঁছাতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হলে মায়েস্থেনিয়া গ্র্যাভিস হয়ে থাকে। নিউরোমাস্কুলার জাংশন বা নার্ভ এবং মাংস পেশীর সংযোগ স্থলে বিঘ্ন ঘটলে এই সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত ইম্পালসগুলো যখন নার্ভে এসে পৌঁছায় তখন নার্ভের শেষাংশ থেকে অ্যাসিটাইলকোলিন নামক একটি নিউরোট্রান্সমিটার উপাদান বের হয়। নিউরোমাস্কুলার জাংশন থেকে অ্যাসিটাইলকোলিন প্রবাহিত হয়ে অ্যাসিটাইল রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয়ে সক্রিয় হয় এবং মাংস পেশীকে সংকুচিত এবং প্রসারিত হতে সাহায্য করে।
মায়েস্থেনিয়া গ্র্যাভিস হলে অ্যান্টিবডিগুলো রিসেপ্টরগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে যার ফলে অ্যাসিটাইলকোলিন এগুলোর সাথে নিউরোমাস্কুলার জাংশনে মিলিত হতে পারে না। এর ফলে মাংস পেশীর সংকোচন এবং প্রসারন বন্ধ হয়ে যায়। এই অ্যান্টিবডিগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকেই সৃষ্টি হয়। সুতরাং এই রোগ একটি অটোইমিউন ডিজিজ, কারণ এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাহ্যিক বস্তুর হাত থেকে রক্ষা করার বদলে ভুলক্রমে নিজেকেই আক্রমণ করে ফেলে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন: 

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যে সকল বিষয়ের কারণে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়ঃ
  •   বয়সঃ এই রোগ যে কোন বয়সী মানুষের হতে পারে তবে বয়স্ক ব্যাক্তিরা এর দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
  •   লিঙ্গঃ গবেষণায় দেখা গেছে কম বয়সী পুরুষদের তুলনায় কম বয়সী নারীদের এ রোগ বেশি হয়ে থাকে। আবার বৃদ্ধ বয়সী নারীদের তুলনায় পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অধিক।
  •   পারিবারিক সূত্রঃ পরিবারে অন্য কারও এ সমস্যা থাকলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের এ রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ এবং অন্যান্য জাতিদের মধ্যে ২ গুণ কম।  

সাধারণ জিজ্ঞাসা


উত্তরঃ গবেষকগণ এই রোগের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত নন, কিন্তু তাদের মতে এটা কোন বংশগত রোগ নয়। পারিবারিকসূত্রে অটোইমিউন ডিজিজ থাকতে পারে তবে মায়েস্থেনিয়া গ্র্যাভিস সরাসরি বংশগতভাবে হয় না।   

হেলথ টিপস্‌

এই সমস্যা প্রতিরোধের কয়টি উপায় হলঃ
  • মানসিক চাপ
  • অতিরিক্ত তাপমাত্রার সংস্পর্শে থাকা
  • জ্বর
  • অসুস্থতা (যেমন- শ্বসনতন্ত্রে ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, দাঁতের ফোঁড়া)
  • রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে (যেমনঃ হাইপোক্যালেমিয়া যা মূত্রবর্ধক উপাদান এবং প্রায়ই বমি হওয়ার কারণে হয়।)
  • নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবন করলে
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম করা
  • eHealth,Health,HealthCare, Health Care

Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

What is dementia ? Signs, Symptoms, Causes, Tests, Treatment, Care

ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (Intracerebral hemorrhage)