হাইপোথার্মিয়া (Hypothermia)

হাইপোথার্মিয়া (Hypothermia)


বর্ণনা

বায়োলজিক হোমিওস্ট্যাসিস বা থার্মোরেগুলেশনের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় (৩৬.৫° থেকে ৩৭.৫°সেলসিয়াস বা ৯৮ থেকে ১০০° ফারেনহাইট) থাকে। হাইপোথার্মিয়া এমন একটি অবস্থা যখন ব্যক্তির কোর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের (৩৫° সেলসিয়াস বা ৯৫° ফারেনহাইট) তুলনায় কমে যায় এবং বিপাকীয় কার্যাবলী স্বাভাবিক ভাবে সম্পন্ন হয় না। এ অবস্থায় ব্যাক্তির শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়ে যায় আর সেই সাথে অনেকে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না। দিকভ্রান্ত হয়হোঁচট খেতে থাকে এবং গতি ধীর হয়ে যায়। তাদেরকে দেখলে মনে হয় তারা মাতাল হয়ে আছেনকথাবার্তা জড়িয়ে যেতে থাকে। তবে এটা হলো প্রথম পর্যায়ের লক্ষণ। পরবর্তী পর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃৎস্পন্দন আশংকাজনক মাত্রায় কমে আসেব্যক্তি জ্ঞান হারায় এবং মৃত্যুবরন করে। তবে জ্ঞান হারানোর আগে মানুষ এমন কিছু কাজ করে যার নিশ্চিত কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। 

কারণ

যখন শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হারে কমে যেতে শুরু করে মুলত ঠিক তখনই হাইপোথার্মিয়া দেখা দেয় উপযুক্ত পোষাক ছাড়াই দীর্ঘসময় ঠান্ডা পরিবেশ বা ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে থাকার কারণে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন: 

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যে সকল বিষয়ের কারণে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় সেগুলো হলঃ
  • শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ এদের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষমতা কম। তাই শীতকালে বা ঠান্ডা আবহাওয়ায় এদেরকে উপযুক্ত পোষাক পরিধান করাতে হবে।
  • বিভিন্ন মানসিক সমস্যা যেমন- সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার এবং ডিমেন্সিয়ার (কোন কিছু মনে না থাকা) কারণে এটি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ এসব সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি ঠান্ডা পরিবেশে কি ধরণের পোষাক পরিধান করা উচিৎ তা বুঝতে পারে না।
  • মদ্যপানের কারণে রক্ত নালী প্রসারিত হয় এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হ্রাস পায়।
  • নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ যেমন-অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টিসাইকোটিক, ন্যারকোটিক ও সিডেটিভ গ্রহণের কারণেও এই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাতিঃ শ্বেতাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতিদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম। 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ এই রোগের যেকোন লক্ষণ যেমন- শরীরে কাঁপুনি, অসাড়তা, আড়ষ্ঠতা, দিকভ্রান্ততা, অ্যামনেশিয়া ইত্যাদি দেখামাত্র হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যেতে হবে কিংবা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
উত্তরঃ ঘরের ভিতরে থাকলেও কি এই সমস্যা হতে পারে, এর লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে এবং তাপমাত্রা পরিমাপ না করা পর্যন্ত সমস্যাটি নির্ণয় করা যায় না। 
উত্তরঃ ঘরের ভিতরে থাকলেও কি এই সমস্যা হতে পারে, এর লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করে এবং তাপমাত্রা পরিমাপ না করা পর্যন্ত সমস্যাটি নির্ণয় করা যায় না।
উত্তরঃ নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভবঃ
  • ঠাণ্ডা পরিবেশে যাওয়ার পূর্বে উপযুক্ত পোষাক পরিধান করতে হবে।
  • শারীরিক অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • হাইকিং এ গেলে অবশ্যই কাউকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
  • শুষ্ক ও উষ্ণ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পোষাক পরিধান করতে হবে।  

হেলথ টিপস্‌

হাইপোথার্মিয়ায় কেউ আক্রান্ত হলে নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করতে হবেঃ
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে উষ্ণ কোন স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
  • ব্যক্তির জামাকাপড় ভেজা থাকলে তা খুলে ফেলতে হবে।
  • যদি সম্ভব হয় ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট ব্যবহারের মাধ্যমে মাথা, ঘাড়, বুক ও কুঁচকিতে উষ্ণ তাপমাত্রা বজায় রাখতে হবে।
  • গরম খাবার ও পানি খাওয়াতে হবে।
  • শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ব্যক্তিকে উষ্ণ স্থানে রাখতে হবে এবং গরম কম্বল দিয়ে আপাদমস্তক ঢেকে দিতে হবে।
  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। 
  • eHealth,Health,HealthCare, Health Care

Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

What is dementia ? Signs, Symptoms, Causes, Tests, Treatment, Care

ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (Intracerebral hemorrhage)