Panic attack -আতঙ্কগ্রস্ততা

আতঙ্কগ্রস্ততা (Panic attack)


বর্ণনা

হঠাৎ করে কিছুক্ষণের জন্য তীব্র মাত্রায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়াকে আতঙ্কগ্রস্ততা বলে। আতঙ্কগ্রস্থ হওয়ার সময়কাল কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত হতে পারে। আতঙ্কগ্রস্ততা সাধারণত হঠাৎ করেই শুরু হয় এবং ১০ মিনিটের মধ্যেই চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছায়। তবে যে পরিস্থিতির জন্য আতঙ্কগ্রস্ততা দেখা দেয়, সেই পরিস্থিতি থেকে নিষ্কৃতি না পেলে আক্রান্ত ব্যক্তি আরও বেশি সময় ধরে আতঙ্কগ্রস্ত বোধ করতে পারে। আতঙ্কগ্রস্ততা হ্রাস না পেলে এবং আতঙ্ক সৃষ্টিকারী পরিস্থিতি থেকে মুক্ত না হতে পারলে কোন কোন আক্রান্ত ব্যক্তি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উন্মত্ত আচরণ করতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে থামানোর চেষ্টা করা হলে অনেক সময় সে হিংস্রও হয়ে উঠতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে আতঙ্কগ্রস্থতা কয়েক ঘন্টার মধ্যে এমনিতেই কমে যায়। আতঙ্কগ্রস্ততার বিভিন্ন ধরনের প্রভাব রয়েছে। যারা প্রথম বার আতঙ্কগ্রস্থতায় ভোগেন, তাদের সাধারণত হার্ট অ্যাটাক ও স্নায়ুবিক দুর্বলতার অনুভূতি হয়।    

কারণ

আতঙ্কগ্রস্থতার সঠিক কারণ এখনো অজানা, তবে এই রোগটির পিছনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ভূমিকা থাকতে পারে:
  • বংশ এবং জিনগত বিষয়।
  • উচ্চ মাত্রার শারীরিক ও মানসিক চাপ।
  • মানসিক চাপে ভোগার প্রবণতা ।
  • মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কিছু অংশের ক্রিয়াকলাপের পরিবর্তন।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:  

চিকিৎসা

 চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন:
alprazolamclonazepam
diazepamfluoxetine hydrochloride
imipramine hydrochloridelorazepam
mirtazapineparoxetine hydrochloride
venlafaxine hydrochloride

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি আতঙ্কগ্রস্ততার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে:
  • বংশে আতঙ্কগ্রস্ততা্য় ও প্যানিক ডিজঅর্ডারে (panic disorder) আক্রান্ত ব্যক্তি থাকা।
  • উচ্চ শারীরিক ও মানসিক চাপ।
  • প্রিয়জনের অসুস্থতা বা মৃত্যু।
  • জীবনযাত্রায় বড় ধরনের পরিবর্তন, যেমন: সন্তান জন্মদান।
  • শৈশবে শারীরিকভাবে নিগৃহীত হওয়া বা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া।
  • ট্রমা (মানসিক আঘাত) সৃষ্টিকারী কোনো ঘটনার অভিজ্ঞতা থাকা, যেমন কোনো দুর্ঘটনা বা যৌন নির্যাতন।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ নারীদের এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাতঃ কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির  মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ আতঙ্কগ্রস্ততার চিকিৎসা না করা হলে আক্রান্ত ব্যক্তি মাস বা বছর ব্যাপী এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত আতঙ্কগ্রস্ততা যৌবনে শুরু হয়, তবে এর লক্ষণ পরেও দেখা দিতে পারে। এই রোগের ফলে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে সেগুলি হলো: অযৌক্তিক ভয় বা ভীতি (ফোবিয়া), সামাজিক অনুষঙ্গ এড়িয়ে চলা, কর্মক্ষেত্রে সমস্যা, আত্মহত্যার প্রবণতা, অর্থনৈতিক সমস্যা ও মদ্যপান। 

হেলথ টিপস্‌

নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করলে আতঙ্কগ্রস্থতা প্রতিরোধ করা যেতে পারে:
শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করাঃ প্রথমে শেখার চেষ্টা করুন কীভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাত্রা বেড়ে গেল তা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করা এবং দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বানের প্রবণতাকে প্রতিহত করাই শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। ৫ সেকেন্ড নিঃশ্বাস টেনে ২ থেকে ৩ সেকেন্ড ধরে আটকে রাখুন। এবার ৭ সেকেন্ড ধরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। আপনার আতঙ্ক সৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে এই প্রক্রিয়ায় নিঃশ্বাস নিন।
ব্যায়ামঃ ব্যায়াম উদ্বেগ কমায়। এটি অনেকটা উদ্বেগ প্রশমণকারী ঔষুধের মতো কাজ করে। তবে ব্যায়ামের কারণে সৃষ্ট অধিক হৃদস্পন্দনকে অনেকে ভুল করে আতঙ্কগ্রস্থতার লক্ষণ হিসেবে ধারণা করে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়তে পারে।
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনঃ স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন উদ্বিগ্নতা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাস এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি হলে আতঙ্কগ্রস্থতার সম্ভাবনা বাড়ে।
আতঙ্কগ্রস্থতার জন্য প্রস্তুত থাকুনঃ আতঙ্কগ্রস্ততাকে প্রতিরোধ করার জন্য আপনাকে আতঙ্কগ্রস্ততার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিষয়টি কঠিন হলেও অবশ্যই করা সম্ভব। আপনি আতঙ্কগ্রস্ত হতে পারেন- এই বিষয়টি মেনে নিন। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়লে অপেক্ষা করুন এবং তারপর নিজের কাজে মনোনিবেশ করুন।

Popular posts from this blog

Anxiety and panic attacks

What is dementia ? Signs, Symptoms, Causes, Tests, Treatment, Care

ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (Intracerebral hemorrhage)